Ahamori Rail Story by Pallab Mukhopadhyay
“…১৮৩৫-৩৬ সালে ভারতবর্ষের মাটিতেই ইংরাজ ব্যবসায়ী হর্নেম্যানের নেতৃত্বে বাংলা তথা ভারতবর্ষের মাটিতে ক্যালকাটা অ্যান্ড সাগর রেলওয়ে অ্যান্ড হারবার কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান জন্ম নিল। কিন্তু, গভর্নর জেনারেল অকল্যান্ডের অদূরদর্শীতা আর ইচ্ছাকৃত অসহযোগীতায় অকালমৃত্যু ঘটল ভারতের প্রথম রেল কোম্পানির আর বাংলা আবার পিছিয়ে গেল দেশের মাটিতে প্রথম রেলযাত্রা সূচনার গৌরব লাভ থেকে। আরও কিছু বছর পর প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৪২-র জানুয়ারীতে ইংল্যান্ডে গেলেন, করলেন রেল ভ্রমণ এবং বাংলা তথা ভারতে রেল যোগাযোগের পূর্ণ সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে ভারতে ফিরেই পূর্ণ উদ্যমে লেগে গেলেন তাঁর নিজস্ব প্রতিষ্ঠান কার টেগোর অ্যান্ড কোম্পানি গঠনে। পরিকল্পনা নিলেন রানীগঞ্জ, রাজমহল, হাওড়ার মধ্যে রেল লাইন পাতার। ততদিনে ইংল্যান্ডে ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি নামে প্রতিষ্ঠান খুলে ফেলেছেন। দ্বারকানাথ আবার গেলেন ইংল্যান্ড, যাতে প্রস্তাবিত রেলপথে রানীগঞ্জ ও রাজমহলকে জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, স্টিফেনসন কিছুতেই রাজি নয়। এমনকি এক তৃতীয়াংশ মূলধনের প্রস্তাবও খারিজ করে দিলে দ্বারকানাথ বিফল মনোরথ হয়ে দেশে ফিরে গ্রেট ওয়েস্টার্ন বেঙ্গল রেল কম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরী করেন। উদ্দেশ্য, বর্ধমানের রানিগঞ্জ রাজমহল অঞ্চলে রেললাইন পাতা। তিনি আবার গেলেন ইংল্যান্ডে, ১৮৪৫-এর মার্চে। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কোর্ট অফ ডিরেক্টর ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি ছাড়া অন্য কোনো দেশীয় ব্যক্তির হাতে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজের অধিকার দিতে রাজী হল না। ১৮৪৫-এর ১লা অগস্ট প্রিন্স দ্বারকানাথের মৃত্যুতে কার টেগোর অ্যান্ড কোম্পানি আর তাঁর সাধের গ্রেট ওয়েস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি মিশে গেল ইস্ট ইন্ডিয়ান রেল কম্পানীর সঙ্গে।…”
আসন্ন আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলায় প্রকাশিত হতে চলেছে পল্লব মুখোপাধ্যায়ের গবেষণামূলক বই “আহামরি রেল-Story”